ল্যাবএইড এর উদ্যোগে আয়োজিত হয়ে গেল ‘পেশেন্ট অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম অন অস্টিওপোরোসিস’
‘Life is movement, movement is life’ এই শ্লোগানকে উপজীব্য করে ল্যাবএইড হাসপাতালের উদ্যোগে ১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে ঢাকার ম্যারিয়ট কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘পেশেন্ট অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম অন অস্টিওপোরোসিস’।
আক্ষরিক অর্থে অস্টিওপোরোসিস বলতে বোঝায় ছিদ্রযুক্ত হাড়। মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেক শারিরীক পরিবর্তন হয়। যেমন- চুল পাকা বা পড়ে যাওয়া, চামড়া কুচকে যাওয়া, শারিরীককভাবে দূর্বল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। তেমনিভাবে হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়াও একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিশেষ করে মহিলাদের মেনোপজ-পরবর্তী সময়ে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়তে থাকে। পঞ্চাশোর্ধ্ব প্রতি তিনজন মহিলার একজন এবং প্রতি পাঁচ জন পুরুষের একজন এই অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হয়। অস্টিওপোরোসিস চিকিৎসার প্রধান উদ্দেশ্যই হলো হাড় ভাঙার ঝুঁকি কমানো। জীবনযাত্রায় যে নিয়মগুলো মেনে চলা উচিত তা হল - ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করা, নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাসে অভ্যস্থ হওয়া, স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা, পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবার যেমন- ছোট মাছ, ডিম, দুধ ইত্যাদি গ্রহন করা।
মুলত বর্তমান সময়ে এই যাপিত জীবনে প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের শারিরীক পরিশ্রমের পরমিাণ কমে যাওয়ায় আমাদের হাড়ের গঠনেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদের হাড়ের ঘনত্বও কমছে। পাশাপাশি সড়ক দূর্ঘটনাসহ বিভিন্ন রোগ যেমন বাত-ব্যাথার কারণে মানুষের কোমর ও হাঁটু অকার্যকর হয়ে পড়ছে। যার ফলে মানুষ শয্যাশায়ী হয়ে পড়ছে। আর দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী হওয়ার ফলে মানুষের হাড়ের ঘনত্ব ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে এবং তা মানুষকে পঙ্গুত্বের দিকেও ধাবিত করছে। এর একমাত্র প্রতিকার হতে পারে হিপ ও নি রিপ্লেসমেন্ট। কেউ কেউ এখনও হিপ ও নি রিপ্লেসমেন্টসহ হাড়ের বিভিন্ন চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছেন। যেখানে আমাদের দেশেই এখন ল্যাবএইড আর্থোপ্লাষ্টি সেন্টারে এই চিকিৎসা বেশ ভালভাবেই হচ্ছে।
২০০৭ সালে যাত্রা শুরু হওয়া ল্যাবএইড আর্থোপ্লাষ্টি সেন্টার-এ অদ্যাবধি প্রায় আট শতাধিক হিপ এন্ড নি রিপ্লেসমেন্ট (কোমর এবং হাঁটু প্রতিস্থাপন) এর সফল অপারেশন হয়েছে। এতে পঙ্গুত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির পাশাপাশি একদিকে যেমন রোগীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির হাত থেকে বেঁচেছে আবার অন্যদিকে দেশেই বিদেশের সমমানের চিকিৎসা পেয়ে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতিও আস্থাশীল হয়ে উঠেছে।
’জীবনই গতি, গতিই জীবন’ এবং ‘রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই শ্রেয়’ - এই দু’টি ধারণা থেকেই এই পেশেন্ট অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়।
এই অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে উপরোক্ত বিষয়গুলো উল্লেখ করে বক্তব্য প্রদান করেন এবং রোগীদের বিভিন্ন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেন মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক, বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির প্রেসিডেন্ট এবং ল্যাবএইড হাসপাতালের অর্থোপেডিক ডিপার্টমেন্টের বিভাগীয় প্রধান ও চিফ কনসালটেন্ট প্রফেসর ডা. এম. আমজাদ হোসেন।
এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে রোগীদের সচেতনতার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান। এছাড়্ওা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. কাজী শহিদুল আলম, অধ্যাপক ডা. এম খাদেমুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক এবং অধ্যাপক ডা. মো: মইনুজ্জামান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় শতাধিক চিকিৎসকসহ প্রায় দেড়শ হিপ এন্ড নি রিপ্লেসমেন্ট (কোমর ও হাঁটু প্রতিস্থাপন) করা রোগীরা অংশ নেন।
Date of Published : 2/21/2016 1:35:46 PM. .
Back